যারা বাংলাদেশের স্বাধীনতাকে অস্বীকার করেছে, তাদের বিশ্বাস করার কোনো কারণ নেই বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তিনি বলেছেন, যে শক্তি ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের স্বাধীনতার বিরোধিতা করেছিল, আজ সেই শক্তিই ভোল পাল্টে এমন ভাব দেখাচ্ছে—তারাই নাকি নতুন বাংলাদেশ গড়বে। কিন্তু বাংলাদেশের মানুষ এ কথা বিশ্বাস করে না।
রোববার শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস উপলক্ষে রাজধানীর কাকরাইলের ইনস্টিটিউশন অব ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার্স মিলনায়তনে জাতীয়তাবাদী মুক্তিযোদ্ধা দলের আয়োজিত আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন তিনি। সভায় বীর মুক্তিযোদ্ধা ও শহীদ পরিবারের সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।
মির্জা ফখরুল বলেন, যারা আমার জন্ম ও স্বাধীনতাকে অস্বীকার করেছে, তাদের বিশ্বাস করার কোনো কারণ থাকতে পারে না। তিনি বলেন, এবারের নির্বাচন হবে দুটি শক্তির মধ্যে—একটি শক্তি বাংলাদেশের পক্ষে, উদার গণতন্ত্রের পক্ষে এবং প্রকৃত গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার শক্তি। অপর শক্তিটি হলো সেই পশ্চাৎপদ গোষ্ঠী, যারা ধর্মকে ব্যবহার করে সবসময় মানুষকে বিভ্রান্ত করে।
তিনি আরও বলেন, আমরা একাত্তর সালকে ভুলতে পারি না। আমরা যারা মুক্তিযুদ্ধে অংশ নিয়েছি, লড়াই করেছি, যুদ্ধ করেছি—তাদের ত্যাগের বিনিময়ে একটি স্বাধীন ভূখণ্ড পেয়েছি। আজ প্রশ্ন হলো, আমরা কি স্বাধীনতার পক্ষে থাকা শক্তির সঙ্গে থাকবো, নাকি যারা সেই স্বাধীনতাকে নস্যাৎ করতে চেয়েছিল তাদের সঙ্গে থাকবো?
বিএনপি মহাসচিব বলেন, দেশের মানুষ সঠিক সিদ্ধান্ত নেবে বলে আমরা বিশ্বাস করি। সেই সিদ্ধান্ত হবে নির্বাচনে ধানের শীষ প্রতীককে বেছে নেওয়া। এ কারণেই এবারের শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। আজ একটি স্পষ্ট বিভাজন সামনে এসেছে—মানুষ কি স্বাধীনতা, সার্বভৌমত্ব ও গণতন্ত্রকে বেছে নেবে, নাকি সেই শক্তিকে বেছে নেবে যারা অতীতে স্বাধীনতার বিরোধিতা করে দেশের অগ্রযাত্রা ব্যাহত করার চেষ্টা করেছে?
তিনি বলেন, আজ আবার সেই শক্তি মাথাচাড়া দিয়ে উঠেছে এবং ধর্মের নাম করে মানুষকে বিভ্রান্ত করছে। একাত্তর সালেও তারা একই কৌশল নিয়েছিল। শুধু তাই নয়, ১৯৪৭ সালে যখন এ দেশের মুসলমানরা আত্মনিয়ন্ত্রণের অধিকার ও স্বাধীনতার জন্য আন্দোলন করেছিল, তখনও এই শক্তি পাকিস্তান আন্দোলনের বিরোধিতা করেছিল। ১৯৭১ সালে এসে তারা বাংলাদেশের স্বাধীনতার বিরোধিতা করেছে—এটা ইতিহাসের বাস্তব সত্য।
তারেক রহমানের দেশে ফেরার প্রসঙ্গে মির্জা ফখরুল বলেন, আল্লাহর কাছে অশেষ শুকরিয়া যে আমাদের নেতা দীর্ঘ ১৭ বছর নির্বাসনে থাকার পর ইনশাআল্লাহ আগামী ২৫ ডিসেম্বর দেশে ফিরবেন। এটি আমাদের জন্য বড় অনুপ্রেরণা। তিনি বলেন, একদিকে দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া অসুস্থ অবস্থায় হাসপাতালে রয়েছেন, অন্যদিকে তারেক রহমানের প্রত্যাবর্তনের সংবাদ আমাদের জন্য আশার আলো হয়ে এসেছে। তিনি আমাদের সামনে পথ দেখাচ্ছেন, এবং ২৫ ডিসেম্বর তিনি আমাদের মাঝে উপস্থিত হবেন।
সভায় সভাপতিত্ব করেন জাতীয়তাবাদী মুক্তিযোদ্ধা দলের সভাপতি ইশতিয়াক আজিজ উলফাত। বক্তব্য রাখেন বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আবদুস সালাম, সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক সম্পাদক অবসরপ্রাপ্ত লেফটেন্যান্ট কর্নেল জয়নুল আবেদিনসহ মুক্তিযোদ্ধা ও দলের নেতৃবৃন্দ।